ক্রীড়া প্রতিবেদক
পেসার তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিং নৈপুন্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে মূল পর্বে প্রথম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অস্টম আসরের সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ বাংলাদেশ ৯ রানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। এর মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে ১৭তম ম্যাচে এসে জয় খড়া কাটলো টাইগারদের। মূল পর্বে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান এখন ১৭ ম্যাচে ১টি জয় ও ১৬টি হার।
বৃষ্টির হুমকি মাথায় রেখে আজ হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে তাসকিনের বোলিং তোপে পুরো ২০ ওভার খেলে ১৩৫ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ৪ ওভারে ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন তাসকিন।
বাংলাদেশের ইনিংসের সূচনা করেন দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। ৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৪৩। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে ভাঙ্গে শান্ত-সৌম্য জুটি। নেদারল্যান্ডসের পেসার পল ফন মিকেরেনের শর্ট বলে পুল করে মিস টাইমিংয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১৪ বলে ২টি চারে ১৪ রান করা সৌম্য। পাওয়ার-প্লে শেষ হবার পরের ওভারের প্রথম বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শান্ত। বাঁ-হাতি টিম প্রিঙ্গেলের বলে সুইপ করে মিড উইকেটে শান্ত ক্যাচ আউট হলে ২০ বলে ৪টি চারে ২৫ রানে শেষ হয় তার ইনিংসের। পরপর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে হঠাৎ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই চাপ সময়ের সাথে-সাথে বেড়ে যায়। ৯, ১০ ও ১১তম ওভারে মিডল-অর্ডারের তিন ব্যাটার দ্রুত উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেন।
এক প্রান্ত দিয়ে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মধ্যেও অন্যপ্রান্তে উইকেটে সেট হবার চেষ্টায় ছিলেন আফিফ হোসেন। ১৫তম ওভারে আফিফের ১টি করে চার-ছক্কায় বাংলাদেশের রান ১শ স্পর্শ করে। ষষ্ঠ উইকেটে আফিফের সাথে ৩৭ বলে ৪৪ রানের খুবই গুরুত্বপূর্ন জুটি গড়েন নুরুল। জুটিতে ১৯ বলে ২৮ রান তুলেছিলেন আফিফ। আফিফকে থামিয়ে বড় সাফল্য পান লিডে। লেগ সাইডের বল হুক করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ২৭ বলে ৩৮ রান করা আফিফ। শেষ দিকে ১২ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ২০ রান করে বাংলাদেশকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন মোসাদ্দেক হোসেন।
১৪৫ রানের টাগের্ট ছুঁড়ে দিয়ে ব্যাটিংয়ের মত বোলিংয়েও দারুন সূচনা পায় বাংলাদেশ। বল হাতে প্রথম ওভারে আক্রমনে এসেই বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসিয়ে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের প্রথম দুই বলেই দুই উইকেট তুলে নেন তিনি। প্রথম ওভারে তাসকিনের জোড়া সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতে, চতুর্থ ওভারেই আবারও জোড়া সাফল্য পায় বাংলাদেশ। সাকিবের করা ঐ ওভারে দু’টি রান আউট হয়। ৪ ওভার শেষে ১৭ রান উঠতেই চার ব্যাটারের বিদায়ে মহাচাপে পড়ে নেদারল্যান্ডস।
দলের অন্যরা না পারলেও নেদারল্যান্ডসকে লড়াই রেখেছিলেন অ্যাকারম্যান। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৬২ রান করেন তিনি। ৩৯ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন অ্যাকারম্যান। ইনিংসের শেষ বলে নেদারল্যান্ডসের শেষ উইকেট হিসেবে মিকেরেনকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সৌম্য। ২০ ওভারে ১০ উইকেটে ১৩৫ পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয় ডাচরা। বল হাতে বাংলাদেশের তাসকিন ৪ ওভারে ২৫ রানে ৪ উইকেট নেন। আগামী ২৭ অক্টোবর সিডনিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। একই দিন ভারতের বিপক্ষে লড়বে নেদারল্যান্ডস।