মোঃ শফিকুল আলম
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
সাকিব আল হাসানের হাফ-সেঞ্চুরি এবং স্পিনার রিশাদ হোসেনের দারুন বোলিংয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখলো বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘ডি’তে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ২৫ রানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে। এই জয়ে ৩ ম্যাচে ২ জয় ও ১ হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে নেদারল্যান্ডস। নেপাল ২ ম্যাচে ও শ্রীলংকা ৩ ম্যাচে সমান ১ করে পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। এ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে শ্রীলংকার বিদায় নিশ্চিত হলো।
প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। সাকিব ৪৬ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৪ রান করে ম্যাচ হারে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচ সেরা হন সাকিব।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংসটাউনে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ যখন রানের চাকা ঘুড়ানো শুরু করেছেনই তখন লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। ২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় ক্রিজে তানজিদের সঙ্গী হন সাকিব। কিন্তু নবম ওভারে পেসার পল ভ্যান মিকেরেনের শর্ট বলে মিড উইকেটে বাস ডি লিডকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৬ বলে ৩৫ রান করা তানজিদ। তৃতীয় উইকেটে সাকিব-তানজিদ ৩২ বলে ৪৮ রান যোগ করেন।
দলীয় ৭১ রানে তানজিদের বিদায়ে উইকেটে আসেন ইনফর্ম তাওহিদ হৃদয়। সাবধানে খেলে উইকেটে সেট হবার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু স্পিনার টিম প্রিঙ্গলের বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড আউট হন ১৫ বলে ৯ রান করা হৃদয়। টি-টোয়েন্টিতে ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৮ বল খেলা সাকিব। ২০২২ সালের অক্টোবরে ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ও ১৯ ইনিংস পর হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব।
সাকিবের হাফ-সেঞ্চুরির পরই মিকেরেনের শর্ট বলে পুল করে ডিপ মিড উইকেটে এঙ্গেলব্রেখটের হাতে ধরা পড়েন ২১ বলে ২৫ রান করা মাহমুদুল্লাহ। সাকিব-মাহমুদুল্লাহ ৩২ বলে ৪১ রান যোগ করেন। মাহমুদুল্লাহ ফেরার পর ইনিংসের শেষ ১৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৯ রান যোগ করে বাংলাদেশকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন সাকিব ও জাকের আলি অনিক। ৯টি চারে ৪৬ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন সাকিব। ৩টি বাউন্ডারিতে ৭ বলে অনবদ্য ১৪ রান করেন জাকের। নেদারল্যান্ডসের আরিয়ান ও মিকেরেন ২টি করে উইকেট নেন।
১৬০ রানের টার্গেট খেলতে নেমে ২২ রানের সূচনা পায় নেদারল্যান্ডস। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আরেক পেসার তানজিম হাসান। নিজের তৃতীয় ডেলিভারিতে সাফল্য পান মাহমুদুল্লাহ। উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড আউট হন ৩টি ছক্কায় ১৬ বলে ২৬ রান করা বিক্রমজিত।
১৫তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে চিন্তা মুক্ত করেন স্পিনার রিশাদ। পরের দুই ওভারে এডওয়ার্ডসকে (২৫) মুস্তাফিজ এবং লোগান ফন বিককে (২)আউট করেন রিশাদ। ১১৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৩৪ রান করে ডাচরা। বাংলাদেশের রিশাদ ৩৩ রানে ৩ ও তাসকিন ৩০ রানে ২ উইকেট নেন। এছাড়া মুস্তাফিজুর-তানজিম ও মাহমুদুল্লাহ ১টি করে উইকেট নেন। আগামী ১৭ জুন কিংসটাউনে গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।