ক্রীড়া প্রতিবেদক
যুব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে, অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে এক রুদ্ধশ্বাস প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব। কাতারে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইউরোপের শক্তিশালী দল বেলজিয়ামের মুখোমুখি হয়েছিল দিয়েগো প্লাসেন্তের আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের শুরুটা কিন্তু আলবিসেলেস্তেদের জন্য ততটা সহজ ছিল না। কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল দল। কিন্তু সময় যত গড়াতে থাকে, ততই ছন্দ ফিরে পায় তারা। অবশেষে, ৩৬তম মিনিটে সেই বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত আসে। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে একটি রিবাউন্ড কাজে লাগিয়ে, শক্তিশালী ডান পায়ের শটে বল জালে জড়িয়ে দেন রামিরো তুলিয়ান! আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে এগিয়ে গেল।
কিন্তু ফুটবলে নাটক শেষ হয় না সহজে। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ লগ্নে, যখন মনে হচ্ছিল আর্জেন্টিনা লিড ধরে রাখবে, তখনই উদয় হন দে কিম্পে। বেলজিয়ামের এই খেলোয়াড় গোল করে স্কোরলাইন ১-১ এ সমতায় নিয়ে আসেন।
দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা একাধিক সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে ব্যর্থ হয়। আর তার মূল্য দিতে হয় তাদের। ম্যাচের ১৫ মিনিট পেরোনোর পর, একাধিক রিবাউণ্ডের সুযোগ নিয়ে স্ট্যান নেয়ার্ট গোল করে বেলজিয়ামকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন। তরুণ আর্জেন্টিনা তখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায়।
কিন্তু মনে রাখবেন, এটি আর্জেন্টিনা! ‘ফুটবলিং গ্রিট অ্যান্ড হার্ট’ যাকে বলে, তা এদিন দেখিয়ে দিল প্লাসেন্তের দল। ২-১ গোলে পিছিয়ে থেকেও তারা হার মানতে রাজি ছিল না। অবিশ্বাস্য দ্রুততার সাথে মাত্র তিন মিনিটের ব্যবধানে ম্যাচের ছবি বদলে দেয় এই তরুণরা!
২৫তম মিনিটে, গোল করে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান ফাকুন্দো জাইনিকস্কি! স্কোর ২-২। এবং তার ঠিক পরেই, ২৮তম মিনিটে, দলের তৃতীয় এবং জয়সূচক গোলটি আসে ফেলিপে এসকুইভেলের পা থেকে! ৩-২! একটি দুর্দান্ত কামব্যাক সম্পূর্ণ হলো!
শেষ পর্যন্ত, ৩-২ গোলের এই দুর্দান্ত জয় দিয়ে অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করল আর্জেন্টিনা। রামিরো তুলিয়ান, ফাকুন্দো জাইনিকস্কি, এবং ফেলিপে এসকুইভেল—এই তিন তারকাই এদিন দলের জয়ের নায়ক। এই জয়ের পর গ্রুপ ‘ডি’-তে আর্জেন্টিনার পরবর্তী প্রতিপক্ষ হলো তিউনিসিয়া এবং ফিজি।

