ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অভিষেকে আমির জাঙ্গোর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ওয়ানডেতে তিন ম্যাচের সিরিজে তৃতীয়বারের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২২ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ৪ উইকেটে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অভিষেক ওয়ানডেতে ৮৩ বলে ১০৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন ২৭ বছর বয়সী বাঁ-হাতি ব্যাটার জাঙ্গো। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৫ ও ৭ উইকেটে জিতেছিলো ক্যারিবীয়রা। এর আগে ২০০৪ ও ২০১৪ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয়দের কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেয়েছিলো বাংলাদেশ।

সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শূন্যতেই বিদায় নেন ওপেনার তানজিদ হাসান। বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান আলজারি। অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ব্রান্ডনকে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফিরেন লিটন দাস।

৯ রানে ২ উইকেট পতনের পর সাবধানে খেলতে শুরু করেন সৌম্য ও অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। ২৪তম ওভারের তৃতীয় বলে সৌম্যকে শিকার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্রেক—থ্রু এনে দেন মোতি। লেগ বিফোর আউটের আগে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৩ বলে ৭৩ রান করেন সৌম্য। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য-মিরাজ ১২৭ বলে ১৩৬ রান যোগ করেন। সতীর্থকে হারানোর পর রাদারফোর্ডের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হন ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৩ বলে ৭৭ রান করা টাইগার দলনেতা মিরাজ। তার ফেরার পরপরই সাজঘরের পথ ধরেন আফিফ হোসেনও। রাদারফোর্ডের বলে কিংকে ক্যাচ দেন ২টি চারে ১৫ রান করা আফিফ।

১৭১ রানে পঞ্চম উইকেট পতনে চাপ অনুভব করতে শুরু করে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ পায় ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২১ রানের সংগ্রহ। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৩ বলে মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত ৮৪ রান করেন। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ বলে অনবদ্য ৬২ রান করেন জাকের।

৩২২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পঞ্চম ওভারের মধ্যেই দলীয় ৩১ রানে ৩ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৮৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর কার্টির সাথে জুটি বাঁধেন জাঙ্গো। বাংলাদেশ বোলারদের দারুনভাবে সামাল দিয়ে রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়েছেন তারা। ষষ্ঠ উইকেটে ৫৩ বলে ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৪ ওভার বাকী থাকতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দারুন জয়ের স্বাদ দেন জাঙ্গো ও মোতি। ওয়ার্নার পার্কে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এটি। নিজেদের ইতিহাসে এ নিয়ে চতুর্থবার তিনশ’র বেশি রান তাড়া করে জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দু’বার জীবন পেয়ে ছক্কা মেরে অভিষেক ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করতে ৭৯ বল খেলেন জাঙ্গো। ইতিহাসের ১৮তম ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে ক্যারিবীয়দের প্রথম ব্যাটার হিসেবে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিলেন ডেসমন্ড হেইন্স।

৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৮৪ বলে ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন জাঙ্গো। ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩১ বলে অনবদ্য ৪৪ রান করেন মোতি। বাংলাদেশের রিশাদ ২টি, হাসান-নাসুম ও তাসকিন ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন জাঙ্গো এবং সিরিজ সেরা রাদারফোর্ড। আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

Related articles

Comments

Share article

spot_img

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.