মোঃ শফিকুল আলম
জাতীয় স্টেডিয়ামে দারুন হাস্যজ্জল বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। কিন্তু মুখে হাসি থাকলেও মাথায় সারাক্ষণ অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তার। আগামী ১০ ই জুন মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ নিয়েই যত চিন্তা এখন স্প্যানিশ কোচের। কোচিং ক্যারিয়ারে সম্ভবত সবচেয়ে বড় আর কঠিন অ্যাসাইনমেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে হাভিয়ের কাবরেরা।
এই ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের যে পরিমাণ উন্মাদনা তৈরি হয়েছে তাতে পাহাড়সম চাপ বাংলাদেশ দলের হেড কোচের ওপর। দেশে এই মুহূর্তে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাকে টপকে ফুটবল উঠে এসেছে সবার উপরে। সাধারণ মানুষ সবার মুখে মুখে এখন হামজা চৌধুরী, ফাহামিদুল ইসলাম, শমিত সোম এসব নামগুলো। ক্রিকেটকে বাদ দিয়ে মিডিয়া কর্মীরা এখন ব্যস্ত ফুটবলের খবর সংগ্রহে। তাই এই মুহূর্তে চাপে থাকাটাই স্বাভাবিক হাভিয়ের কাবরেরার।
কোচ ভালো করেই জানেন বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরকে হারাতে পারলে তার জনপ্রিয়তা যেমন বাড়বে তেমনি সাফল্যের মাপকাঠিতে এক ধাপ উপরে উঠে যাবেন তিনি। হাভিয়ের এটাও জানেন সিঙ্গাপুরের কাছে বাংলাদেশ হেরে গেলে তাকে তুলোধোনা করে ছাড়বে এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। এমনিতেই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের দল নিয়ে তাকে কঠোর সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। ফুটবল ভক্তদের অনেকেই ভারতের বিপক্ষে জিততে না পারার জন্য কোচের দল গঠনকে দায়ী করেছিলেন। তাই হাভিয়ের কাবরেরাকে এবার সতর্কতার সাথে পা ফেলতে হবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে।
বাংলাদেশের দল ঘোষণার দিন কোচ নিজেই জানিয়েছেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মিডফিল্ড পজিশন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। অর্থাৎ কোচের হাতে যথেষ্ট অপশন রয়েছে। আর তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো এখন বাংলাদেশের কোচের পরিকল্পনার উপর নির্ভর করছে।
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে হাভিয়ের কাবরেরার ম্যাচ জয়ের পরিসংখ্যান ২৯ শতাংশ। কাবরেরার অধীনে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৩১ ম্যাচ খেলে নয়টিতে জিতেছে। হেরেছে ১৫ টি। বাংলাদেশ ড্র করেছে ৭ ম্যাচে। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোচের দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তি হচ্ছেন হাভিয়ের কাবরেরা।
জেমি ডে বাংলাদেশের ২৯ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোচের দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটি জেমি ডের সাথে ভাগাভাগি করছেন হাভিয়ের কাবরেরা। দুজনেই জিতেছেন নয়টি করে ম্যাচ। এবার জেমিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পালা কাবরেরার। স্প্যানিশ এই কোচের জন্য ১০ই জুন কি সেই দিন। আর সেটা হলে একদিকে হাভিয়ের যেমন সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন, তেমনি এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে বাংলাদেশেরও ভালো অবস্থান তৈরি হবে। মূল পর্বে খেলার পথেও এগিয়ে যেতে থাকবে লাল সবুজের বাংলাদেশ।