ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৮৭ রানে হারের লজ্জা পেল বাংলাদেশ। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে নেদারল্যান্ডসকে ২২৯ রানে অলআউট করেও বড় ব্যবধানে ম্যাচ হারলো টাইগাররা। ৪২ ওভার ২ বলে মাত্র ১৪২ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর টানা পাঁচ ম্যাচ হারলো সাকিবের দল। পয়েন্ট টেবিলের নয়ে নেমে গেছে তারা। আর দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে নেদারল্যান্ডস।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ২৩০ রানের টার্গেটকেও পাহাড়সম কঠিন বানিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ৭০ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। দলীয় ১৯ রানেই ফিরে গেছেন ওপেনিং দুই ব্যাটার। লিটন দাস ৩ রানে ও তানজিদ হাসান ১৫ রানে আউট হয়েছেন। দলকে বিপদের মধ্যে রেখে নাজমুল হোসন শান্ত ফিরে গেছেন দ্রুত। ৯ রানে শান্ত যখন আউট হয়েছেন বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৩ উইকেটে ৪৫ রান।
এরপর ৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ৬৩ থেকে ৬ উইকেটে ৭০ রান হয় বাংলাদেশ দল। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলেছেন ১৪ বল। ৫ রান করে সাকিবও যোগ দিয়েছেন ব্যর্থতার মিছিলে। ভালোই ব্যাট করছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৫ রান করার পর তারও সহ্য হয়নি। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ৫ বল খেলতে পেরেছেন। তার নামের পাশে ১ রান। এরপর বাংলাদেশের ইনিংস কিছুটা টেনে নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাহেদী হাসান। তাদের জুটিতে যোগ হয়েছে ৩৮ রান। ১৭ করার পর রান আউট হয়েছেন মাহেদী।
বাংলাদেশের সব আশা ভরসা তখন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ঘিরে। কিন্তু ৪১ বলে ২০ রানে রিয়াদ আউট হলে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় সেখানেই। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৮ উইকেটে ১১৩ রান। এরপর মুস্তাফিজ ২০ ও তাসকিন ১১ রানে আউট হলে ৪২ ওভার ২ বলে ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। নেদারল্যান্ডসের পল ফন মিকেরেন ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় নেদারল্যান্ডস। শুরুতেই ডাচদের চাপে ফেলে দেন বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। দলীয় ৩ রানে ভিক্রমজিৎ সিং আউট হয়েছেন তাসকিনের বলে। এক রানের ব্যবধানে শরিফুলের শিকার হয়েছেন ম্যাক্স ও’দাউদ। প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন অ্যাকারম্যান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ করেন তারা। নেদারল্যান্ডসের ইনিংসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। ওয়েসলি বারেসিকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৪১ রান করেন বারেসি।
দলীয় ৬৩ রানে ওয়েসলি বারেসির পর আউট হয়েছেন কলিন অ্যাকারম্যানও। তাকে আউট করেন সাকিব আল হাসান। দলীয় ১০৭ রানে বাস ডি লিডি আউট হলে পঞ্চম উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। ম্যাচে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন বাস ডি লিডি। দলের এই বিপদের সময় সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটকে নিয়ে ভালো একটা পার্টনারশিপ গড়েন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৭৮ রান যোগ করেন তারা। নেদারল্যান্ডসের ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। এই জুটিও ভাঙের মুস্তাফিজুর রহমান। ৬৮ রানে আউট হয়েছেন এডওয়ার্ডস। নেদারল্যান্ডের সংগ্রহ তখন ৬ উইকেটে ১৮৫ রান। এই ১৮৫ রানেই আবার বিদায় নিয়েছেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট। শেষ দিকে লোগান ফন বিকের ১৬ বলে অপরাজিত ২৩ রানে ৫০ ওভারে ২২৯ রানে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস। শরিফুল, তাসকিন, মুস্তাফিজ ও মেহেদী নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।