ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার খেলা মানেই এক অন্য উন্মাদনা। তবে এই ফিফা উইন্ডোতে ভেনেজুয়েলা এবং পুয়ের্তো রিকোর মতো দলের বিরুদ্ধে ১-০ জয় এবং ৬-০ গোলে বিশাল জয়— এই ম্যাচগুলো কি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য যথেষ্ট পরীক্ষা ছিল? অনেকেই বলবেন, না। মিয়ামিতে সীমিত সংখ্যক দর্শকের সামনে খেলা এই ম্যাচগুলো আর্জেন্টিনার আসল ফুটবলিং মানদণ্ড বোঝার জন্য যথেষ্ট নয়। কিন্তু লিওনেল স্কালোনি এই নয় দিনের সহাবস্থান থেকে কিছু ইতিবাচক জিনিস অবশ্যই পেয়েছেন।
আর্জেন্টিনা বহু আগেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে, তাই এই ম্যাচগুলো ছিল মূলত ‘স্কালোনির’ ফাইন-টিউনিংয়ের সুযোগ। মোট সাতটি প্রশিক্ষণ সেশন, যেখানে কোচ কৌশলগত বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন এবং বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড়কে (ফ্ল্যাকো লোপেজ, মোরেনো, লাউতারো রিভেরো, এবং ক্যাম্বেস) অভিজ্ঞ দলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। লক্ষ্য একটাই— আগামী বছরের বিশ্বকাপের ২৬ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড তৈরি করা।
পুয়ের্তো রিকোর বিরুদ্ধে ৬-০ গোলে জয় ছিল প্রত্যাশিত, কারণ ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান ১৫৫তম। কিন্তু এই খেলায় আর্জেন্টিনা জার্সি এবং ফুটবলের প্রতি নিজেদের গভীর সম্মান ও একাগ্রতা বজায় রেখেছে। ম্যাচের শুরুতেই ১৬ হাজারেরও বেশি দর্শককে মুগ্ধ করে গোল উৎসব শুরু হয়।
প্রথম বড় হাততালিটা যায় গোলরক্ষক দিবু মার্টিনেজের দিকে! ৭০ মিটার দূর থেকে আন্তোনেত্তির নেওয়া এক অবিশ্বাস্য শট তিনি সেভ করে দেন। এই সেভ ডিজেড-এর ক্লিন শিট ধরে রাখার স্বপ্নকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল।
এরপরই আর্জেন্টিনা আক্রমণের গতি বাড়ায়। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার করেন জোড়া গোল, আর মেসির দারুণ অ্যাসিস্ট থেকে গোল করেন মন্টিয়েল। প্রথমার্ধেই ৩-০।
দ্বিতীয় অর্ধেও খেলার চিত্র বদলায়নি। আর্জেন্টিনা আরও বেশি গোল করার চেষ্টা করেছে। এই ম্যাচে মাঝমাঠে নজর কেড়েছেন অ্যানিবাল মোরেনো, যিনি একজন ‘নাম্বার ৫’ (ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার) হিসেবে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। এছাড়া, তরুণ খেলোয়াড় লাউতারো রিভেরো তার শৈশবের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। আর ফ্যাকু ক্যাম্বেস নেমেছিলেন দিবুর বদলি হিসেবে।
গোলগুলোর প্রায় চারটিতেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন নিকো গঞ্জালেস, যিনি লেফট উইঙ্গার বা থ্রি/উইঙ্গার হিসেবে খেলেছেন। কৌশলগতভাবে ৪-৪-২ ফর্মেশন দেখা গেলেও, প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণ ভাঙতে স্কোয়াড বারবার রূপ বদলেছে।
তবে সব ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন লিওনেল মেসি। মাত্র ৭২ ঘণ্টার বিশ্রামের পরেও তিনি পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন! দুটি অ্যাসিস্ট (মন্টিয়েল এবং লাউতারোকে) সহ প্রায় প্রতিটি আক্রমণেই ছিল তার পায়ের ছাপ।