বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার  হাইভোল্টেজ ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। এতে প্রথম দল হিসেবে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। আজ শ্রীলংকার পাল্লেকেলে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ইশান কিশান ও হার্ডিক পান্ডিয়ার জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪৮ দশমিক ৫ ওভারে ২৬৬ রানে অলআউট হয় ভারত। পান্ডিয়া ৮৭ ও কিশান ৮২ রান করেন। ভারতের ইনিংস শেষে বৃষ্টি শুরু হলে পাকিস্তান দল ব্যাট করতে মাঠেই  নামতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত  স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করে ম্যাচ অফিসিয়ালরা।

ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে  ভারত ও পাকিস্তানকে। গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান ২৩৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছিলো নেপালকে। এতে ২ খেলায় ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। ১ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। ১ ম্যাচ খেলে কোন পয়েন্ট পায়নি নেপাল।

আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পাল্লেকেলেতে এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও নেপাল। ঐ ম্যাচের বিজয়ী দল সুপার ফোরে খেলবে। কোন কারণে  ম্যাচটি পরিত্যক্ত হলে সুপার ফোরে খেলবে ভারত। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেবে নেপাল। 

আজকের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুরু থেকেই  পাকিস্তানী পেসারদের সাবধানে সামলাতে থাকেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত ও শুভমান গিল। ৫ ওভারে ১৫ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন রোহিত ও গিল। ২টি চারে ২২ বলে ১১ রান করা রোহিতকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি।

অধিনায়কের বিদায়ে উইকেটে এসে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খুলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু আফ্রিদির বলে ইনসাইড এডজে ব্যক্তিগত ৪ রানে বোল্ড হন কোহলি। ফলে ২৭ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। গিলকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন শ্রেয়াস আইয়ার। ২টি বাউন্ডারিতে  ভালো কিছুর আভাস দেন তিনি। কিন্তু পেসার হারিস রউফের বলে পুল করতে গিয়ে ফখর জামানকে ক্যাচ দিয়ে ১৪ রান করে  বিদায় নেন আইয়ার।

এক প্রান্তে আগলে উইকেটে সেট হয়ে ১৫তম ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন গিল। টেস্ট মেজাজের ব্যাটিং করে গিল(১০) আউট হলে  ৬৬ রানে ৪ উইকেট পতনে বিপদে পড়ে ভারত। এ অবস্থায় পাকিস্তানের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন  কিশান ও পান্ডিয়া। পরিস্থিতির সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান দু’জনে। ২০তম ওভারে ভারতের রান ১শতে নেন তারা।

২৯তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম ও টানা চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান কিশান। এজন্য ৫৪ বল খেলেন তিনি। ৩৩তম ওভারে কিশানের ছক্কায় পান্ডিয়ার সাথে জুটিতে শতরান পূর্ণ হয়। পরের ওভারে ওয়ানডেতে ১১তম অর্ধশতক করেন ৬২ বল খেলা পান্ডিয়া।

কিশান-পান্ডিয়ার জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পর ৩৭তম ওভারে ২শ রান পেয়ে যায় ভারত। ৩৮তম ওভারে পাকিস্তানকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন রউফ। পুল শটে ছক্কা মারতে গিয়ে বাবর আজমকে সহজ ক্যাচ দেন কিশান। ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮১ বলে ৮২ রান করেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে ১৪১ বলে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন কিশান-পান্ডিয়া।  ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে এটিই ভারতের  সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ২০০৫ সালে কানপুরে পঞ্চম উইকেটে ১৩৫ রানের জুটি গড়েছিলেন ভারতের বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও মোহাম্মদ কাইফ।

কিশান ফেরার পর রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে ৩৪ বলে ৩৫ রান যোগ করেন পান্ডিয়া। ৪৪তম ওভারে দলীয় ২৩৯ রানে পান্ডিয়াকে ফিরিয়ে দেন  আফ্রিদি। ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯০ বলে ৮৭ রান করেন পান্ডিয়া। পান্ডিয়া ফেরার পর ভারতের লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা সুবিধা করতে না পারলে শেষ পর্যন্ত  ৭ বল বাকী থাকতে ২৬৬ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। শেষ দিকে জাদেজা ১৪ ও জসপ্রিত বুমরাহ ১৬ রান করেন। পাকিস্তানের আফ্রিদি ৪টি, নাসিম-রউফ ৩টি করে উইকেট নেন।

Related articles

Comments

Share article

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.