ক্রীড়া প্রতিবেদক
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্সের অলরাউন্ড নৈপুন্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থান ধরে রাখলো তামিম-মুশফিকের ফরচুন বরিশাল। আজ নিজেদের দশম ম্যাচে বরিশাল ১৮ রানে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। ৩১ বলে ৪৮ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা মায়ার্স।
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ৬ জয় ও ৪ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানেই থাকলো বরিশাল। ১০ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠস্থানে থেকে প্লে-অফের দৌড়ে আছে সিলেট। তবে খুলনা টাইগার্স বা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের যে কোন দল ১টি ম্যাচ জিতলেই, বিদায় ঘন্টা বাজবে সিলেটের। ১০ ম্যাচে ১০ করে পয়েন্ট আছে খুলনা ও চট্টগ্রামের।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৭ বলে ২৩ রানের সূচনা করেন বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ। পাওয়ার প্লেতে ৪২ রানের মধ্যে বরিশালের দুই ওপেনারকে বিদায় করেন সিলেটের পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ৩টি করে বাউন্ডারিতে শেহজাদ ১১ বলে ১৭ ও তামিম ১৮ বলে ১৯ রান করেন। চার নম্বরে নেমে ৮ রানের বেশি করতে পারেননি সৌম্য সরকার। নবম ওভারে ৬৫ রানে ৩ উইকেট পতনের পর বরিশালের হাল ধরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স ও মুশফিকুর রহিম। জুটি শুরু থেকে সিলেটের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ৯ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে ৭১ রান যোগ করেন তারা। এতে ১৫ ওভারে ১৪১ রান পায় বরিশাল।
১৭তম ওভারে মায়ার্স-মুশফিকের ৪৮ বলে ৮৪ রানের জুটি ভাঙ্গেন সিলেটের পেসার শফিকুল ইসলাম। ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩১ বলে ৪৮ রান করেন ৩৩ রানে জীবন পাওয়া মায়ার্স। মায়ার্স না পারলেও ৩০ বলে এবারের আসরে তৃতীয় অর্ধশতকের দেখা পান মুশফিক। দলের রান দেড়শ পার করে ৩২ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৫২ রানে রান আউট হন মুশি। শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ২টি ছক্কায় ৭ বলে ১৫ এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ১২ বলে অপরাজিত ১২ রানের সুবাদে ৬ উইকেটে ১৮৩ রানের সংগ্রহ পায় বরিশাল। সিলেটের তানজিম ৪৮ বলে ৩টি উইকেট নেন।
১৮৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বরিশালের মিডিয়াম পেসার মায়ার্সের তোপের মুখে পড়ে সিলেট। রানের খাতা খোলার আগেই প্রথম ওভারে আয়ারল্যান্ডের হ্যারি টেক্টরকে ও নাজমুল হোসেন শান্তকে সাজঘরের পথ দেখান মায়ার্স। পঞ্চম ওভারে রান আউট হয়ে ফিরেন জাকির হাসান(৫)। ১৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিলেট। দশম ওভারে সেই চাপ দিগুন রুপ নেয়। ৪০ রানে সিলেটের ষষ্ঠ উইকেটের পতন হয়। এ সময় অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ১০, শ্রীলংকার অ্যাঞ্জেলো পেরেরা ১৭ এবং জিম্বাবুয়ের রায়ার্ন বার্ল ৩ রানে বিদায় নেন।
উইকেট পতন ঠেকাতে সপ্তম উইকেটে দলের হাল ধরেন ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল ও আরিফুল হক। বরিশালের বোলারদের বিপক্ষে মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৫২ বলে ১০৮ রান যোগ করেন তারা। ২৮ বলে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন আরিফুল। ১৯তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার ওবেড ম্যাককয়ের শিকার হন ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩১ বলে ৫৭ রান করা আরিফুল।
আরিফুলের ফেরার ওভারে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২৯ বল খেলা হাওয়েল। শেষ ওভারে ২৩ রানের দরকারে সাইফুদ্দিনের বলে হাওয়েল আউট হলে সিলেটের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩২ বলে ৫৩ রান করেন হাওয়েল। ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করে ম্যাচ হারে সিলেট। বরিশালের মায়ার্স ১২ রানে ৩ উইকেট নেন।