শান্তর  সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে  শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ

মোঃ শফিকুল আলম

বাঁ-হাতি ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে রাখলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। দিন শেষে ৭৯ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৬২ রান করেছে টাইগাররা।  টেস্ট ইতিাসে প্রথম দিন  যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। আগেরটি ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৭৪ রান করেছিলো টাইগাররা। তিন নম্বরে নেমে ১৭৫ বলে ১৪৬ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন ইনফর্ম শান্ত। ৭৬ রানে থামেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় উইকেটে ২১২ রানের জুটি গড়েন শান্ত ও জয়।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। দলের ইনিংস শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে বিচ্ছিন্ন জয় ও জাকির। আফগানিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা পেসার নিজাত মাসুদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১ রানে থামেন জাকির। রিভিউ নিয়ে জাকিরের বিদায় নিশ্চিত করে আফগানিস্তান।

দলীয় ৬ রানে জাকিরকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে জয়ের সাথে জুটি বাঁধেন শান্ত। জুটি গড়ার পথে আফগান বোলারদের উপর চড়াও হন শান্ত। তবে টেস্ট মেজাজে খেলতে থাকেন জয়। প্রথম সেশনেই হাফ-সেঞ্চুরি পেয়ে যান শান্ত। তার হাফ-সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ১১৪ রান তুলে প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ।

বিরতি থেকে ফিরেও ব্যাট হাতে অবিচল ছিলেন শান্ত ও জয়। ইনিংসের ৩৫তম ওভারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলতে নামা জয়। ৩৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ১ রান নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম ম্যাচে তৃতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নেন শান্ত। ১৮টি চারে ১১৮ বল খেলে তিন অংকে পৌঁছান তিনি।

৪৫তম ওভারে জয়কে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন আফগানিস্তানের স্পিনার রহমত শাহ। ১৩৭ বলে ৯টি চারে ৭৬ রানে আউট হন জয়। দ্বিতীয় উইকেটে ২৬৭ বলে ২১২ রান যোগ করেন তারা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি।

দ্বিতীয় সেশনে জয়কে হারিয়ে ২ উইকেটে ২৩৫ রান তুলে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এ সময় শান্ত ১২৬ ও মোমিনুল হক ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন। বিরতির পর রিভিউ নিয়ে মোমিনুলকে ১৫ রানে আউট করেন মাসুদ। মোমিনুলের পর বিদায় নিতে পারতেন শান্তও।  ৫৫তম ওভারে মাসুদের করা  প্রথম বলে পুল করতে গিয়ে বোল্ড হন শান্ত। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে ‘নো বল কল করেন থার্ড আম্পায়ার। জীবন পেয়েও সেটি কাজে লাগাতে পারেননি শান্ত।

৫৮তম ওভারের শেষ বলে বাঁ-হাতি স্পিনার আমির হামজার অফ স্টাম্পের বাইরের বল ক্রিজ ছেড়ে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড উইকেটে নাসির জামালের হাতে ক্যাচ দেন শান্ত। ১৭৫ বল খেলে ২৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৪৬ রান করেন শান্ত।

শান্তর পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক লিটন দাস। মুখোমুখি হওয়া ১০ম বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার দিয়ে ছক্কা মারেন লিটন। ছক্কায় ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে বাঁ-হাতি স্পিনার জহির খানের শিকার হয়ে ৯ রানে থামেন টাইগার অধিনায়ক। এতে ২৯০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

শেষ সেশনে দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে চিন্তায় পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের শেষভাগে আর কোন বিপদ হতে দেননি মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ষষ্ঠ উইকেটে ৯৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৭২ রানের জুটি গড়ে দিন শেষ করেন মুশফিক ও মিরাজ। মুশফিক ৪১ ও ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। আফগানিস্তানের মাসুদ ২টি, জহির-হামজা ও রহমত ১টি করে উইকেট নেন।

Related articles

Comments

Share article

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.