শ্রীলংকাকে ২৮০ রানের গুটিয়ে দিয়েও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শ্রীলংকাকে ২৮০ রানে অলআউট করেও স্বস্তিতে নেই স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান করেছে টাইগাররা। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ২৪৮ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে ২৮০ রান করে শ্রীলংকা। ৫৭ রানে ৫ উইকেট পতনের পর ষষ্ঠ উইকেটে ২০২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু। লড়াকু ইনিংসে ১০২ রান করে আউট হন ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু। বাংলাদেশের দুই পেসার খালেদ আহমেদ ও অভিষিক্ত নাহিদ রানা ৩টি করে উইকেট নেন।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রায় ৯ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিং নিলো বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলো টাইগাররা।

সকালের কন্ডিশনকে কাজে লাগাতে অধিনায়ক শান্তর প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্তকে সঠিক প্রমান করেন পেসার খালেদ আহমেদ। দ্বিতীয় ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের দারুন ক্যাচে ওপেনার নিশান মাদুশকাকে ২ রানে বিদায় করেন খালেদ। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টায় ৩৭ রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে এবং তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুশলকে শিকার করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন খালেদ। গালিতে জাকির হাসানকে ক্যাচ দেন ১৬ রান করা কুশল। একই ওভারের শেষ বলে আবারও শ্রীলংকা শিবিরে আঘাত হানেন খালেদ। দারুন এক ডেলিভারিতে ১৭ রান করা করুনারত্নেকে বোল্ড করেন তিনি।

খালেদের তোপে ৪১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে শ্রীলংকা। এই চাপ আরও বাড়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্তর দারুন ফিল্ডিংয়ে। সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙ্গে ৫ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজকে রান আউটের ফাঁদে ফেলেন শান্ত। কিছুক্ষণ বাদে শ্রীলংকার পঞ্চম উইকেট শিকার করে বাংলাদেশ। আরেক পেসার শরিফুল ইসলামের বলে লেগ মেহেদি হাসান মিরাজের দারুন ক্যাচে ৯ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন দিনেশ চান্ডিমাল।

চান্ডিমাল ফেরার পরের বলে শ্রীলংকার ষষ্ঠ উইকেট তুলে নিতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু নতুন ব্যাটার কামিন্দুর ক্যাচ ফেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। জীবন পেয়ে অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে শ্রীলংকাকে লড়াইয়ে ফেরান কামিন্দু। দু’জনের দাপটে দ্বিতীয় সেশনেই ঘুড়ে দাঁড়ায় শ্রীলংকা। ৫ উইকেটে ২১৭ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় লঙ্কানরা। এসময় ধনাঞ্জয়া ৮৩ ও কামিন্দু ৭৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

বিরতির পর ইনিংসের ৫৭তম ও অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানার করা দশম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন কামিন্দু। সেঞ্চুরির পাবার পরের ডেলিভারিতে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২৭ বলে ১০২ রান করা কামিন্দু। টেস্টে প্রথম উইকেটের দেখা পাওয়া রানার ঐ ওভারের শেষ বলে চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি পূর্ন করেন ধনাঞ্জয়া। সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করতে পারেনিন ধনাঞ্জয়াও। রানার দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৩১ বলে ১০২ রান করা লঙ্কান দলনেতা। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২৪৫ বলে ২০২ রান যোগ করেন ধনাঞ্জয়া-কামিন্দু। ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি শ্রীলংকার।

দলীয় ২৬৪ রানের মধ্যে ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু ফেরার পর শেষ ৩ উইকেটে খুব বেশি রান পায়নি শ্রীলংকা। ৬৮ ওভারে ২৮০ রানে অলআউট হয় তারা। বাংলাদেশের খালেদ ৭২ রানে ও রানা ৮৭ রানে ৩টি করে উইকেট নেন। শরিফুল ও তাইজুল ১টি শিকার করেন।

দিনের শেষ ভাগে ব্যাট হাতে নেমে মহাবিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ১৭ রানের মধ্যে শ্রীলংকার বাঁ-হাতি পেসার ফার্নান্দোর শিকার হন ওপেনার জাকির হাসান ও অধিনায়ক নাজমুল। জাকির ৯ ও নাজমুল ৫ রান করেন।

তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও মোমিনুল হক। জুটিতে ১৪ রান যোগ হবার পর তাদের বিচ্ছিন্ন করেন পেসার কাসুন রাজিথা। ৫ রান করা মোমিনুল শিকার হন রাজিথার। দলীয় ৩১ রানে মোমিনুল ফেরার পর দিনের বাকী ১২ বল বিপদ ছাড়া শেষ করেন জয় ও নাইটওয়াচম্যান তাইজুল। জয় ৯ ও তাইজুল শূণ্যতে অপরাজিত আছেন। শ্রীলংকার ফার্নান্দো ২টি ও রাজিথা ১টি উইকেট নেন।

Related articles

Comments

Share article

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.