ক্রীড়া প্রতিবেদক
আগামী ১১ ডিসেম্বর ঢাকায় শুরু হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ। টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ হবে ২২ ডিসেম্বর। টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়া বাকি চার দেশ হচ্ছে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা ও ভূটান। খেলা হবে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি, সম্ভাবনা নিয়ে খেলা প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু।
প্রশ্ন: পাঁচ দল নিয়ে হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশের জন্য কারা চ্যালেঞ্জ হতে পারে ?
আমিরুল ইসলাম বাবু: তিনটি দলের মধ্যেই আমার মনে হয় চ্যাম্পিয়ন সীমাবদ্ধ থাকবে। সাফের এই আসরে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা ও ভূটান আছে। আমরা ভূটানে গিয়েছি। ভূটানের সাথে অনেকবার ফুটবল খেলেছি। আমরা ভারতের সাথে ফুটবল খেলেছি। আমরা কিছুদিন আগে নেপাল গিয়েছিলাম। নেপালের সাথেও খেলেছি। ভারত, নেপাল ও ভূটান এই তিন দেশ প্রচুর একাডেমি করেছে। এর ফলে অনেক বাড়তি খেলোয়াড় তারা তৈরী করতে পেরেছে। সাফের মেয়েদের এই আসরে আমি মনে করি ভারত ও নেপালই আমাদের প্রতিপক্ষ।
প্রশ্ন: সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ শিরোপা জিততে কতটা আত্নবিশ্বাসী ?
আমিরুল ইসলাম বাবু: আমাদের মেয়েদের ফুটবলে আমরা ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছি। আমরা শেষবার বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। সেটা ছিল অনূর্ধ্ব-১৮। এখন খেলব অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে। যেহেতু এটা বাংলাদেশের মাটিতে খেলা হচ্ছে তাই আমাদের মেয়েদের মাঝে একটা জেদ কাজ করছে। আমার বিশ্বাস এই মেয়েরা ভালো ফুটবল খেলে জয় উপহার দেবে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সম্মানিত সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সাফেরও সভাপতি। আমরা বিশ্বাস করি সাফের সভাপতিকে একটা ট্রফি এনে আমরা উপহার দেব।
প্রশ্ন: সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের মেয়েদের অনুশীলন কেমন হচ্ছে ?
আমিরুল ইসলাম বাবু: প্রত্যেকটা মেয়েকে আমরা মানসিকভাবে চাঙা রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের কোচিং স্টাফ, ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে মেয়েদের সাথে আমরা নিয়মিত মিটিং করছি। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি ভালো থাকতে হবে, ভালো ঘুমাতে হবে, ভালো খেতে হবে। সবকিছু মিলে যাতে আমাদের রেজাল্টা আনা যায় সেদিকে আমরা কড়া দৃষ্টি রেখেছি। আমাদের বয়সভিত্তিক প্রত্যেকটা দলকে আলাদা আলাদা অনুশীলন করানো হয়। এটা আমাদের জন্য একটা বাড়তি সুবিধা।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের মেয়ে ফুটবলারদের ফিটনেস কোন পর্যায়ে আছে ?
আমিরুল ইসলাম বাবু: আমাদের মেয়েরা সবাই ফিট আছে। আর সবাই যথেষ্ঠ পরিশ্রম করছে। আমাদের মেয়েরা ভোর পাঁচটা থেকে অনুশীলন করে। ফজরের আযানের সাথে সাথে তারা অনুশীলনে চলে যায়। ফিটনেস লেভেটা মেয়েরা ধরে রাখতে পেরেছে। এর ফলে সাফে মেয়েদের এই টুর্নামেন্টে বাকি যে চারটা দল আছে তাদের উপর আমরা প্রভাব বিস্তার করে খেলতে পারবো। কারণটা হচ্ছে আমাদের মেয়েদের ফিটনেস যথেষ্ঠ ভালো।
প্রশ্ন: বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে আমাদের মেয়েদের সাফল্য অনেক। এর পেছনে আসলে কি কারণ ?
আমিরুল ইসলাম বাবু: আমরা অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমরা যথেষ্ট ডিসিপ্লিনের মধ্যে ছিলাম। আমরা হংকংয়ে মাটিতে হংকংকে হারিয়ে জুকি কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এর মূল কারণ হচ্ছে আমরা ডিসিপ্লিনের মধ্যে ছিলাম। এরপর ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব-১৮ তে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এই সাফল্যের পেছনে কারণ ছিল আমাদের খেলোয়াড়রা ঐক্যবদ্ধ ছিল। তাদের মধ্যে একটা জিনিস কাজ করেছে। আর তা হচ্ছে ডিসিপ্লিন। আমাদের কোচিং স্টাফ, ম্যানেজম্যান্ট সবাই কিন্তু একটা টোটাল প্যাকেজ। আমরা সকলেই প্রথম থেকে একসাথে আছি। যার ফলে কোন মেয়ের কতটুকু প্রতিভা আছে আমাদের কোচিং স্টাফ খুব ভালো করে জানে।