রংপুরকে হারিয়ে রেকর্ড পঞ্চমবারের মত বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রেকর্ড পঞ্চমবারের মত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আজ টুর্নামেন্টে প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে কুমিল্লা ৬ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্সকে। এর আগে ২০১৫, ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সালে ফাইনাল খেলেছে কুমিল্লা।

কুমিল্লার কাছে হারলেও, এখনও ফাইনালে ওঠার সুযোগ থাকছে রংপুরের। টুর্নামেন্টের নিয়মনুযায়ী প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে হেরে যাওয়া দল দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে খেলবে। এজন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে মাঠে নামবে রংপুর। ঐ ম্যাচের বিজয়ী দল ফাইনালে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ হবে। আজ বিকেলে এলিমিনেটর ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে উঠে বরিশাল।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ প্রথম কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই বিপদে পড়ে রংপুর। ৬ ওভারে ৩৫ রানেই ৩ উইকেট হারায় তারা। ওপেনার শামিম হোসেনকে শূণ্যতে স্পিনার তানভীর ইসলাম, ২টি চারে ১৩ রান করা রনি তালুকদারকে পেসার রোহানাত দৌলা বর্ষন এবং সাকিব আল হাসানকে ৫ রানে আউট করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল।

চাপে পড়া রংপুরকে লড়াইয়ে ফেরাতে চতুর্থ উইকেটে ২৬ বলে ৩৯ রান যোগ করেন মাহেদি হাসান ও নিউজিল্যান্ডের নিশাম। দলীয় ৬৬ রানে মাহেদি-নিশাম জুটি ভাঙ্গেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার সুনীল নারাইন। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৭ বলে ২২ রান করে ফিরেন মাহেদি। ছয় নম্বরে নেমে নিশামের সাথে ২৪ বলে ৩৮ রান যোগ করেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান। এরমধ্যে পেসার মুশফিক হাসানের করা ১৩তম ওভারে ১৯ রান সংগ্রহ করেন দু’জনে।

১৩তম ওভারে দলীয় ১০৪ রানে পুরান ফেরার পর কুমিল্লা বোলারদের ওপর চড়াও হন নিশাম ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান । প্রথম ১৩ বলে ৪ রান তুললেও, পরের ১১ বলে ২৬ রান আদায় করে নেন সোহান। রাসেলের দ্বিতীয় শিকার হবার আগে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৪ বলে ৩০ রানে আউট হন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৬ বলে ৫৩ রান যোগ করে রংপুরের বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করেন নিশাম-সোহান।

সোহানের সাথে জুটিতে মাত্র ৩০ বলে এবারের আসরের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান নিশাম। হাফ-সেঞ্চুরির পরও আগ্রাসী ছিলেন তিনি। মুশফিকের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ৩টি ছক্কা ও ২টি চারে ২৮ রান তুলেন নিশাম। সেঞ্চুরির জন্য শেষ বলে ৩ রান দরকার ছিলো তার। কিন্তু ঐ বল থেকে কোন রান পাননি তিনি।

৮টি চার ও ৭টি ছক্কায় সাজানো নিশামের ৪৯ বলে অপরাজিত ৯৭ রানের সুবাদে ৬ উইকেটে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় রংপুর। ২৬৮ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই নিশামের সেরা ইনিংস। শেষ ৪ ওভারে ৬৮ রান পায় রংপুর। কুমিল্লার রাসেল ৩৭ রানে ২ উইকেট নেন।

১৮৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই রংপুরের পেসার আফগানিস্তানের ফজলহক ফারুকির বলে আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারাইন। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে উইকেটে সেট হবার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। প্রথম ৪ ওভারে ২৩ রান তোলেন তারা। পেসার হাসান মাহমুদের করা পঞ্চম ওভারে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২ রান নেন হৃদয়। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে অধিনায়ক লিটনের ১টি করে চার-ছক্কায় ১৬ রান পায় কুমিল্লা। এতে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৬১ রান উঠে কুমিল্লার। এসময় সতীর্থরা ব্যয়বহুল হলেও ২ ওভারে মাত্র ১১ রান দেন সাকিব।

দলের জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে আউট হন ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৭ বলে ৮৩ রান করা লিটন। এরপর ৯ বল বাকী থাকতে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত করেন ইংল্যান্ডের মঈন আলি ও রাসেল। মঈন ৬ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ১২ ও রাসেল ২ রানে অপরাজিত থাকেন। রংপুরের ফারুকি ২টি উইকেট নেন।

Related articles

Comments

Share article

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.