কুমিল্লার হ্যাট্রিক শিরোপা স্বপ্ন ভেঙ্গে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চায় বরিশাল

মোঃ শফিকুল আলম

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দশম আসরের গ্র্যান্ড ফাইনালে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হ্যাট্টিক শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করতে বদ্ধপরিকর ফরচুন বরিশাল। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও গাজী টেলিভিশন।

পঞ্চমবারের মতো বিপিএলের ফাইনাল খেলছে কুমিল্লা। এর আগে চারটি ফাইনালে খেলে সবগুলোতেই জিতেছে তারা। এমন দুর্দান্ত রেকর্ড ফাইনালের আগে কুমিল্লাকে মানসিকভাবে চাঙা রাখবে। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারানোর পেছনে বড় অবদান রাখেন বরিশালের সিনিয়র ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তার দায়িত্বশীল ইনিংস ফাইনালে তুলে বরিশালকে। ফাইনালে কুমিল্লাকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদী বরিশাল শিবির।

মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘আমি কখনও বিপিএল ট্রফি জিততে পারিনি। যে কারণেই আমি এটি স্পর্শ করতে উদগ্রীব হয়ে আছি। আসলে ট্রফি জয়ের ইচ্ছা সবারই থাকে। আমরা এতদূর এসেছি, অবশ্যই জয়ের জন্য চেষ্টা করবো। হ্যাঁ, কুমিল্লা কখনওই ফাইনালে হারের স্বাদ পায়নি, কিন্তু কে জানে এবারই হয়তো প্রথম ফাইনাল হারবে তারা।’

তৃতীয় আসর থেকে বিপিএলে নিয়মিত খেলছে কুমিল্লা। নিজেদের প্রথম আসরেই মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে শিরোপা জিতেছিলো কুমিল্লা। পরের দুই আসরে বাজে পারফরমেন্স করে কুমিল্লা। কিন্তু ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে ২০১৮ সালে আবারও ট্রফি জয়ের স্বাদ পায় দলটি।

এর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি’ আসরে অংশ নেয়নি কুমিল্লা(কোভিড-১৯ এর কারনে ২০২০, ২০২১ বিপিএল অনুষ্ঠিত হয়নি) । কিন্তু পূনরায় বিপিএল শুরু হওয়ার পর সর্বশেষ দুই আসরের শিরোপা জিতে হ্যাট্টিক ট্রফি জয়ের সুর্বন সুযোগ তৈরি করে কুমিল্লা। গত দুই মৌসুমে কায়েসের নেতৃত্বে শিরোপা জিতেছিলো তারা। এবার কুমিল্লাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিটন দাস। অধিনায়ক পরিবর্তন হলেও কুমিল্লার পারফরমেন্সে আগের মতোই ধারালো আছে।

এ দিকে, তিনবার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেও সবক’টিতে হেরেছে বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি। বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে ২০২২ সালে ফাইনালে উঠলেও রোমাঞ্চকর ম্যাচে কুমিল্লার কাছে মাত্র ১ রানে হেরে যায় বরিশাল। এর আগে ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে ফাইনালে উঠেছিলো বরিশাল বার্নার্স নামে দলটি। কিন্তু ফাইনালে ঢাকা গ্লাডিয়েটরসের কাছে ৮ উইকেটে হারে তারা। এরপর ২০১৫ সালে ফাইনাল উঠলেও কুমিল্লার কাছে ৩ উইকেটে হেরে শিরোপা জিততে পারেনি বরিশাল বুলস নামে খেলা দলটি।

এবার লিগ পর্বে তৃতীয়স্থানে থেকে প্লে­অফের টিকিট পায় বরিশাল। প্লে-অফে এলিমিনেটর এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে ফাইনালে উঠে দক্ষিণ বাংলার দলটি। মুশফিকুর রহিমের মতে, প্লে-অফের দু’টি জয় আত্মবিশ্বাস যোগাবে দলকে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বুড়োদের দল এবং অনেক লোক আমাদের বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়ে বলেছে, এমন অভিজ্ঞতায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ট্রফি জিততে পারে না। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ছিল, আমরা ফাইনাল খেলতে পারবো।’

এবারের বিপিএলে টেবিলের তলানিতে থেকে আসর শেষ করা দুর্দান্ত ঢাকার কাছে হেরে যাত্রা শুরু করেছিলো কুমিল্লা। এরপর ঘুড়ে দাঁড়িয়ে দ্বিতীস্থানে থেকে প্লে-অফে উঠে তারা। প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে প্রথম সুযোগেই ফাইনাল নিশ্চিত করে কুমিল্লা। হ্যাট্টিক শিরোপা জয়ের সুর্বন সুযোগ কাজে লাগাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা।

Related articles

Comments

Share article

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.