মোঃ শফিকুল আলম
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিকুর রহিম। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে শেষ যে ব্যাটার ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন টেস্টে তিনিও মুশফিকুর রহিমই। আজও হয়তো মুশফিকের নামের পাশে আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরি লেখা হতো। ২০১৩ সালের ৮ই মার্চ মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে বাংলাদেশ প্রথম কোন ডাবল সেঞ্চুরি দেখে। ভেন্যু ছিল এই গলই যেখানে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি খেলছে। ১২ বছর আগে শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের সেই টেস্ট ম্যাচ ড্র তে শেষ হয়েছিল। টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিক এরপর আরও দুটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। অর্থাৎ টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পাঁচটি ডাবল সেঞ্চুরি আছে যার মধ্যে তিনটিই মুশফিকের। বাকি দুটি সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের।
সর্বোচ্চ রান মুশফিকের। ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে করা মুশফিকের ২১৯ রান বাংলাদেশের কোন ব্যাটারের টেস্টে সর্বোচ্চ রান। এছাড়া ওয়েলিংটন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান ২১৭ এবং খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবাল ২০৬ রান করেছিলেন।
টেস্টে বাংলাদেশের সর্বশেষ ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন মুশফিকুর রহিম ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০৩ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। পাঁচ বছর পর আবারও সেই সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছিল। শুধু মুশফিক একা না বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ডাবল সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন।
শান্ত ১৩৬ ও মুশফিক ১০৫ রান নিয়ে গল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেন। টেস্টের প্রথম দিন এই দুই ব্যাটার যে স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করেছেন তাতে অনেকের মনেই আশার সঞ্চার হয়েছিল যে অন্তত একটি ডাবল সেঞ্চুরি হয়তো দেখা যাবে। কিন্তু শান্ত আজ মাত্র ১২ রান যোগ করেই আউট হয়েছেন। ১৪৮ রান করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। শান্ত ফিরে যাওয়ার পর ডাবল সেঞ্চুরির আশা বেঁচে ছিল মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে। সম্ভাবনার পালে মুশফিক আরও হাওয়া দিয়েছেন দেড়শ রান পেরিয়ে। কিন্তু ১৬৩ রান করার পর ফার্নান্দোর বলে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। মুশফিক যখন আউট হয়েছেন বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৫ উইকেটে ৪৫৮ রান।

মুশফিক ও শান্তর পার্টনারশিপ ছিল ২৬৪ রানের। মুশফিকের আরো একটি দারুন পার্টনারশিপ গড়ে উঠে লিটন দাসের সাথে। কিন্তু মুশফিকের আউটের পর ১৪৯ রানে ভাঙ্গে এই জুটি। সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু মুশফিক আউট হওয়ার সময় বাংলাদেশের যে রান ছিল ঠিক সেই রান থাকা অবস্থায় আউট হয়ে গেছেন লিটন দাস। দশ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন লিটন। এক সময় যে বাংলাদেশকে মনে হয়েছিল ৬০০ রানের পাহাড়ে উঠে যাবে সেখানে এখন ৫০০ রান হয় কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। গল টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৪৮৪ রান।
আজ বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনের অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। ৩৯ ওভার খেলা কম হয়েছে আজ। উইকেটে বাংলাদেশের কোন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান নেই। হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা দুজনেই রানের খাতা খুলতে পারেননি। ৫০০ রান করতে বাংলাদেশের দরকার আরো ১৬ রান। হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা কি পারবেন বাংলাদেশকে পাঁচশোর ঘর নিয়ে যেতে।