বিশ্বকাপের সুপার এইটে বাংলাদেশ

মোঃ শফিকুল আলম

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে

কোন সমীকরন কিংবা হিসেবে নিকেশের মারপ্যাচে নয় শেষ ম্যাচ জিতেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দুই পেসার তানজিম হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং নৈপুন্যে ঈদুল আজহার দিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরে সুপার এইট নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘ডি’তে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ ২১ রানে হারিয়েছে নেপালকে।

এই জয়ে ৪ ম্যাচে ৩ জয় ও ১ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে সুপার এইটে খেলবে বাংলাদেশ। নেপাল ছাড়াও গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছিলো টাইগাররা। এই প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ ৩ ম্যাচ জয়ের নজির গড়লো বাংলাদেশ। গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে সুপার এইটে গ্রুপ-১ এ অস্ট্রেলিয়া (২১ জুন), ভারত (২২ জুন) ও আফগানিস্তানের (২৫ জুন) বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। ৪ ম্যাচে পূর্ণ ৮ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপ থেকে আগেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৯ দশমিক ৩ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর তানজিম-মুস্তাফিজের দারুন বোলিংয়ে নেপালকে ৮৫ রানে গুটিয়ে দেয় টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম কোন দল এত কম রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিতলো। তানজিম ৪টি ও মুস্তাফিজ ৩ উইকেট নেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে নেপালের পেসার সোমপাল কামির বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন বাংলাদেশের ওপেনার তানজিদ হাসান। দ্বিতীয় ওভারে নেপালের স্পিনার দিপ্রেন্দ্র সিংয়ের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৪ রানে সাজঘরে ফিরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও আগের ম্যাচের হিরো সাকিব আল হাসান। ১০ রান করা লিটনকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান সোমপাল। লিটনের বিদায়ে ক্রিজে এসে ২টি চারে ইনিংস শুরু করলেও নেপালের অধিনায়ক রোহিত পাউডেলের বলে আউট হন ৯ রান করা তাওহিদ হৃদয়।

চতুর্থ উইকেটে ২০ বলে ২২ রানের জুটি গড়েন সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ। নবম ওভারে মাহমুদুল্লাহর রান আউটে ভাঙ্গে জুটি। ২টি চারে ১৩ রান করেন তিনি। নবম ওভারে দলীয় ৫২ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১১তম ওভারে পাউডেলের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২২ বলে ১৭ রান করেন সাকিব। এরপর তানজিম হাসান ৩ ও জাকের আলি ১২ রানে বিদায় নিলে ৭৫ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ দুই উইকেটে ৩১ রান যোগ করে বাংলাদেশের রান ১শ পার করেন রিশাদ হোসেন, তাসকিন ও মুস্তাফিজ।

সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশের সমর্থকদের উল্লাস

নবম উইকেটে রিশাদের সাথে ১৩ ও শেষ উইকেটে মুস্তাফিজকে নিয়ে ১৮ রান তুলেন তাসকিন। এতে ১৯ দশমিক ৩ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। রিশাদ ১৩ ও মুস্তাফিজ ৩ রানে আউট হলেও, ১২ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন। নেপালের সোমপাল কামি, পাউডেল, দিপেন্দ্র ও লামিচানে ২টি করে উইকেট নেন।

১০৭ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসানে তোপের মুখে পড়ে ২৬ রানে ৫ উইকেট হারায় নেপাল। ওপেনার কুশল ভার্তেল(৪), অনিল শাহ(০) , অধিনায়ক পাউডেল(১) ও সুন্দীপ জোরাকে (১) শিকার করেন তানজিম। এরমধ্যে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ডাবল উইকেট মেডেন নেন তানজিম। পরের ওভারে আরও একটি মেডেন উইকেট নেন তানজিম।

৪ ওভারে ২ মেডেনে ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশের তানজিম। ১০ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি এটিই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং তার। এছাড়া শততম ম্যাচে মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৭ রানে ৩, সাকিব ৯ রানে ২ এবং তাসকিন ১ উইকটে নেন।

Related articles

Comments

Share article

spot_img

Latest articles

Newsletter

Subscribe to stay updated.